February 28, 2009

Bangladesh On Crisis


গনকবর

গনকবর

wating for their nearest one

.............

crying for dearest one

গনকবর

people are working to find out ARMY officers










February 27, 2009

আমার গল্প .....................


আমি সদ্য কৈশোর পেরুনো এক কন্যা। স্বপ্ন দেখতে আমি খুব ভালবাসি, ভালবাসি কুয়াশার ভোরে শিউলি ফুল কুড়ানো, প্রচন্ড রোদে পিচ ঢালা পথে হেঁটে চলা আর উরন্ত বলাকা। ছোটবেলা থেকেই আমার স্বপ্ন আমি উরন্ত বলাকার হব। আকাশ ছেড়ে পারি দেব আকাশের অপর প্রান্তে। আমি মানুষটা শুধু চার ফুট ১০ ইঞ্চি, গায়ের রঙ উজ্জ্বল শ্যামলা। কৃষ্ণ আমার প্রানের সখা। মেঘে ঢাকা আকাশের নিচে বয়ে চলা উদ্দাম বাতাসে এলোচুল খুলে দৌড়তে আমি খুব ভালবাসি। কখন আপনারা অনেক তারাভরা আকাশের নিচে নদীর বয়ে চলা দেখেছেন? অথবা দেখেছেন বিষন্ন কোন বিকেলে নদীর মাঝে বসে তার ঠিকানাবিহীন বয়ে চলা? আমি দেখেছি, না না আমি অনুভব করেছি। হৃদয় দিয়ে ধারন করেছি বাতাসের গন্ধ, তাদের না বলা কথা, দূর থেকে ভেসে আসা কোন সুরের মুর্ছনা। পাগল ভাবছেন আমাকে? হুম্ম একটু পাগল আছি বটে কিন্তু তারপরেও আমার আশেপাশের মানুষ গুলু আমায় এত্ত ভালবাসে যে আমি অবাক হয়ে যাই। যদি আপনাদের সদয় অনুমতি পাই তবে মাঝে মাঝে এসে আপনাদের আমার গল্প শুনিয়ে যাব। আমার কথায় কথায় আপনাদের নিয়ে যাব হয়ত কখনো অনুভব না করা, হয়ত না ছোঁয়া কোন প্রকৃতির বুকে, না দেখা একটা দেশে, স্বপনের দেশে যেখানে বাস্তবতা বড় নির্মম। কি যাবেন তো আমার সাথে?

ইশ দেখুন তো কান্ড? আমি এখন আমার নামটাই আপনাদের জানাই নি। আমি?? কি নাম দেই বলুন তো? আচ্ছা আমার নাম আজ দিলাম আমার লেখকের এবং তার সবচে ভাললাগা মানুষের প্রিয় নাম অনুসূয়া। ভাবছেন আমার অন্য দুই সখি কোথায়? আরে আমি কি শকুন্তলার সখি নাকি? হুম্ম তবে আমার সখি আছে, চারপাশে অনেক মানুষ আছে, না বলা অনেক কথা আছে, একটা ঠিকানা আছে, একটা ভোরের অপেক্ষা আছে আপনাদের সবার মত। সকালে জেগে উঠা নতুন সুর্য, দিনের পাখিদের ছুঁইয়ে যাওয়া, গোধুলীর আলোর মিষ্টি হাসি, একলা চাঁদ সাথে একলা রাত। অনুমতি পেলে এখন থেকে সব কিছুর নির্জাস আমরা সবাই একত্রে নেব। জানিয়ে দেব আমার না লেখা কোন চিঠির একা ডাকবাক্সে পড়ে থাকার গল্প, একা চিঠি আর একা থাকা সুর, অজান্তে ছুঁইয়ে যাওয়া কারোর চোখের নীল, ইথারে ভেসে আসা কোন ভাল লাগার গল্প। শুধু এখন অপেক্ষা আপনাদের অনুমতির। কি পাব তো? গল্পের নামটা আপনার অনুমতি দিলে পরেই দেব। আমি অপেক্ষায় রইলাম……………..

ব্যস্ত দিনের কথাঃ৩

আজকাল বড্ড বেশী ঘুম কাতুরে হয়ে গেছি আমি। খালি ঘুমাতে ইচ্ছে করে। সকালে ঘুম ভাঙ্গানোর জন্যে একবার মামনি, একবার বাবা, একবার দাদা ফোন করে। আমি এই উঠছি বলে আবার ঘুমিয়ে পরি। আশার কথা যে এই সেমিস্টারে আমার সকালে ক্লাস মাত্র একদিন, রবিবার। আর ছুটি?? বলব না। কারন শুনলে আপনারা জেলাস ফিল করবেন। তবে ছুটির দিন গুলোতেও আমি ব্যস্ত থাকি কোন না কোন কাজে।
আজকে বসে বসে লিস্ট করছিলাম কি কি এখন ব্লগার বন্ধুদের সাথে শেয়ার করিনি। লিস্ত এর মধ্যে প্রথমে ছিল স্বরস্বতি পুজা, তারপরে বসন্ত আর তারপরে ভালবাসা দিবস। তারপরে যেটা ভাবলাম সেটা হল কে কি লিখেছেন পড়া হয়নি। এক সপ্তাহ কম কথা! আর আমি যা আলসেমি শুরু করেছি কোনটা রেখে কোনটা পড়ি?
আজকে সারাদিন বসে বসে খালি গান শুনেছি। আমার সব সময়ের সঙ্গী মিউজিক সেটা গান হোক অথবা ইন্সট্রুমেন্টাল, বই আর মাঝে মাঝে আমার 6B পেন্সিল। যেটা বলছিলাম একটার পর একটা গান শুনেই চলেছি। বিকাল পর্যন্ত শুনেছি রবীন্দ্রনাথের গান তাও আমার প্রিয় শিল্পী বন্যা দি’র কন্ঠে। আজকে আমার সংগ্রহে থাকা প্রায় অনেক গুলো গান শুনেছি। গান শুনতে শুনতে ভাবছিলাম যে পড়া নিয়ে বসবো।কিন্তু কিসের কি! মডার্ন ফিজিক্সের বই বাদ দিয়ে নিয়ে বসলাম উপন্যাসের বই নিয়ে। সুচিত্রা ভট্টাচার্যের “অন্য বসন্ত”র প্রথম গল্পটা শেষ করলাম। আমার পড়ার টেবিলে এখন ৩টা বই পড়ে আছে, আর রুমমেট দেরও কিছু বই আছে। অনেক বই জমে গেছে তার উপরে বই মেলা থেকে কেনা বইতো আছেই! আমার রূমমেট গুলা মাঝে মাঝে খুব বিরক্ত করলেও আমাদের একটা দিকে খুব মিল আর সেটা হল বই পড়া। একদিন আমি কি যেন কাজ করছিলাম, হঠাৎ শুনি কে যেন কাঁদছে। অনেক রাত তখন, প্রথমে পাত্তা দেইনি কিন্তু একটু পরেই শব্দটা একটু বাড়তেই পিছনে ফিরে দেখি আমার এক রুমমেট কাঁদছে! কি রে কি হয়েছে? চিন্তিত আমরা অন্য দুজনের প্রশ্ন। তখন দেখি সে বই পড়ছে আর কাঁদছে। বইটা সম্ভবত ছিল আনিসুল হকের “মা”। এমনি অনেক ঘটনা আছে আমার রুমে! এবার যা নিয়ে কথা বলছিলাম সেখানে ফিরে আসি। গান শুনছিলাম, এখনো শুনছি। তবে এখন শুনছি গজল তাও আবার জগজিৎ সিং এর। তাও আবার প্রিয় একটা গান, সরকতি যায়ে রুখ সে নাকাব আহিস্তা আহিস্তা, নিকালতা রাহা হে আফতাব আহিস্তা আহিস্তা। সুরটা প্রচন্ড প্রিয়। তবে একটা গানেই বার বার আমি আটকে যাই,
এই উদাসী হাওয়ার পথে পথে মুকুল গুলি ঝরে,
আমি কুড়িয়ে নিয়েছি তোমার চরনে দিয়েছি….
কি কারনে জানি না তবে রবিঠাকুরের এই গানটা আমার খুব ভাল লাগে। চেষ্টা করি একবার হলেও শুনতে। মন খারাপ বা কোনকিছু করতে পারছিনা তখনি আমার আশ্রয় রবিঠাকুর। আজকে গানটা শুনতে শুনতে অনেক পিছনে চলে গিয়েছিলাম। মনে পরে গিয়েছিল প্রথম ভাললাগার কথা। সেকথা না হয় পরে অন্যকোন একদিন শোনাব আপনাদের। কি যে জাদু আছে রবিঠাকুরের লেখায় আমি জানি না। কিন্তু চুম্বকের মত খালি আমকে টেনে ধরে। বাঙ্গালী মাত্রেই মনে হয় রবিঠাকুর টানে।
পড়তে বসেছি কিন্তু চোখের সামনে ফেসবুকের পেইজ টা খোলা। বন্ধুদের বসন্তের ছবি গুলো দেখছিলাম। খুবই সুন্দর!
এর মাঝে আমরা রুমমেটরা বই নিয়ে সমালোচনা করে গেলাম। কোন বই কেমন! এভাবেই চলে গেল আরো একটা দিন!
অথচ ব্যস্ত দিন গুলোতে কি যে কষ্ট হয়! ক্লাস, পড়া, পরীক্ষা। কিন্তু সপ্তাহ শেষের দিন গুলো এলেই আমার কেন জানি ভাল লাগে না। খালি ঘুম আসে। আমার এক রুমমেটতো প্রায়ি বলে, কি আছে জীবনে এই ঘুম ছাড়া! শুনে আমরা হাসলেও কথাটা একেবারে মিথ্যে নয়। ঘুম, কাজ, ছুটে চলা প্রতি মুহুর্তে আর খাওয়া এই হল আমাদের জীবন। তারপরেও একটু হাসি একটু কান্না, একটু বিষন্নতা, টুকরো টুকরো অভিজ্ঞতা, মজা যেন বেঁচে থাকার লোভকে বাড়িয়ে দেয় হাজার গুন!

February 26, 2009

কি দেই এর শিরোনাম?

অনেকদিন পর লিখতে বসেছি। ভাবছি কিছু লিখব। আজ ওই ভাবনাতে আমার শেষ। সেটা কীবোর্ড দিয়ে আর মনিটরের পাতায় লেখা হচ্ছে না। সাজছে না নতুন কোন রুপে। লিখব তো ঠিক আছে কিন্তু কি নিয়ে লেখা যায়? ভাবছি, একের পর এক আইডিয়া আসছে মাথায়, ওই মাথাতেই থেকে যাচ্ছে। ঠিক যেন মনের মত হচ্ছে না। তাই ভাবলাম আমার এই না লিখতে পারার অপারগতা নিয়েই আজ লিখব। কিন্তু তাতেও আমার অস্বস্তি, লিখব কি লিখব না। লিখতে গিয়েও কয়েকবার থমকে গিয়েছি, মুছে দিয়েছি, আবার শুরু করেছি, আর নিজেকে শাসন করছি।

আমার লেখার শুরুটা হয় ডায়েরী লেখা দিয়ে। স্কুলে পড়বার সময় ছোটদের পাতায় লিখেছি ছদ্মনামে। বড় হয়েও লিখেছি। যখন কলেজে পড়ি চিঠি লিখতাম, আমার দুই বন্ধুর কাছে। খুব ভাল লাগত। একটা সময় ভেবেছিলাম, মানুষ মনে হয় চিঠি লেখা ভুলে গেছে। ভুল ভাঙ্গে যখন প্রথম আলোর ছুটির দিনের একটা কুইজ জেতার পর বাসায় চিঠি আসতে থাকে। অনেক অনেক চিঠি, প্রতিটা আলাদা এবং বিষয় বস্তুতেও একটু পার্থক্য থাকে। পড়েছি আর হেসেছি। উত্তর দেইনি কাউকে আবার কাউকে উত্তর দিয়ে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছি। আর আজ আমি লেখার বিষয় খুঁজে পাচ্ছি না।

কি নিয়ে লিখি? কাউকে সামান্য জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানাতে গিয়ে থেমে যাওয়ার কথা? নাকি নিজের না পাওয়ার-পাওয়ার ব্যর্থতার কথা? কিন্তু লিখব এটা যেন আমি জানি। সেদিন একবন্ধু যাকে কিনা আমি রীতিমত আমার লেখা গুলোর লিঙ্ক দিয়ে দিয়ে পড়াই। আজকাল উনিও প্রায়ই জিজ্ঞেস করেন কি লিখলে নতুন? আমিও লিখলে লজ্জা শরমের মাথা খেয়ে লিঙ্ক টা দিয়ে অপেক্ষা করি বন্ধুটির মন্তব্যের আশায়। একদিন একেক রকমের কথা, কখনো সমালোচনা, কখনো প্রশংসা। একদিন হঠাৎ করেই বললেন, বন্ধু তোমার মনে আছে তুমি লিখেছিলে কয়েকটা টুকরো লেখা “নামহীন তুমি”, “আবারো তুমি”….তোমার ওরকম লেখা গুলো আমার খুব ভাল লাগে। এখন কেন লিখ না ওরকম লেখা? আমি অবাক হই আর বলি, আপনার ওই লেখা গুলো সত্যি ভাল লেগেছিল? ও গুলু ছিল আমার writers block থেকে বের হয়ে আসার ঠিক ঠিক পরের লেখা। আমার নিজেরই ওই লেখা গুলো ভাল লাগে না মনে হয় এডিট করি।আমার মা লেখা গুলু দেখে বলেছেন, আরো একবার দেখো লেখা গুলো। এডিট করা দরকার। কিছু এডিট করতে গিয়েই আবার পড়লাম ঝামেলায়, একজন বলে, কেন করলে তো আর একজন বলে আরো একটু কাটাকাটি দরকার। শেষ পর্যন্ত হাল ছেড়ে আমি বলি, দূর ছাই লিখব না আবার ওগুলো। যেমন আছে তেমনই থাক।

বাহ, নিজের কাজে আমি আজ নিজেই অবাক। কি মজা অনেক খানি লিখে ফেললাম। কিন্তু কি দেই শিরোনাম? প্রথম আলো অফিসে যেদিন গেলাম, মাহাবুব ভাই বলেন লিখেন না কেন? আমি বলি লিখিতো। আর আজকে লেখার কোন বিষয় পাচ্ছি না, অথচ কিছুদিন আগেও ভেবে রেখেছিলাম কি নিয়ে লিখব। কি অদ্ভুত আমরা! কি অদ্ভুত আমাদের মন! কখন যে কি চায় কিছুই বোঝা যায় না। সত্যি মানুষের মন বোঝা বড় দায়!

একটি অব্যক্ত ভালবাসা এবং আমি...............

---ইশ কতদিন তোমায় দেখিনা বলতো? তোমার গায়ের গন্ধ শুকি না?
---দূর পাগল!
---সত্যি, তোমার গায়ে একটা অদ্ভুত গন্ধ আছে, আমি নাক দিলেই পাই। মিষ্টি একটা গন্ধ। আমি গায়ে নাক শুকি আর বলি। আর সে হাসে। ভারি মিষ্টি সে হাসি। ঘরে ফিরে যখন তার মুখের এই হাসিটা দেখি অনেকদিন না দেখতে পাওয়ার কষ্ট গুলো যেন নিমিষেই বিদায় নেয়।
---তুমি কিন্তু এখন বাইরের কাপড় ছাড়নি। একটু রাগি কন্ঠে আমাকে হুঁশিয়ারি জানায়।
---এই রে! ভুলেই গিয়েছিলাম। ভীষন আলসেমি লাগছে। একটু পরে ছাড়ি?
---দেরী করলেই দেরী হবে। তুমি কি এখন ছোট্টটি আছ? আচ্ছা ঠিক আছে এসো আমি হেল্প করি।
আমি লজ্জায় সরে আসি। বলি, দূর কি যে বল না? আমি বুঝি পারি না? আচ্ছা যাই। কিন্তু ভীষন ক্ষিদে পেয়েছে আর অনেক কথা বলার বাকি, পেটে কথা আর ক্ষিধা দুটোই ভীষন কষ্ট দিচ্ছে।
---এত কথা না বলে আগে ফ্রেশ হয়ে নাও।

ফ্রেশ হয়ে আসতে আসতে আমার খাবার রেডি।
--- খাইয়ে দাও।
---বাচ্চা আছো এখনো?
--- আচ্ছা খাইয়ে দিতেই তো বললাম। এতে ছোট বড়র কি আছে? যাও দিতে হবে না।
----এখন খাও, হাতে অনেক কাজ পরে আছে। রাতে খাইয়ে দেব।
খাওয়া শেষে পায়ে পায়ে ঘুরতে শুরু করা। এতদিন কি হয়েছে, নতুন বন্ধু কারা, পড়াশুনার খবর, মজা করার খবর, কে কি বলল, ইথারের সম্পর্ক, লেখালেখির খবর বলার শুরু। অনেক রাত হয়ে গেলেও কথা আমার শেষ হয় না। পাশে শুয়েও গল্প করতে করতে ঘুমানো চাই। এমন অনেক বার হয়েছে, আমি গল্প করছি আর একটু পরে শুনি ওর দ্রুত নিঃশ্বাস ফেলার শব্দ।

ছুটি শেষে ফেরার সময় আমি বলি, এই তোমার ঠিকানাটা দাওতো, তোমাকে চিঠি লিখব।
--সময় পাবে চিঠি লেখার?
---সময় খুঁজে বের করব। আগে তো তুমি অনেক চিঠি পেতে, এখন না হয় আমার কাছ থেকেই পেলে।
----ঠিক আছে লিখ। কিন্তু তোমার সাথে তো প্রতিদিন আমার ফোন এ কথা হয়।
---তাতে কি হয়েছে? তাই বলে কি চিঠি লেখা যাবে না? আর তাছাড়া কিছু কথা মুখে বলা যায় না। সেক্ষেত্রে চিঠির মাধ্যমে বলাটা অনেক সহজ।
“উফফ, তোমাদের এত কথা কেন বলতো, এখন আবার চিঠি দিতে হবে? বাসায় আসলে মুখে খই ফোটে তারপরেও কথা শেষ হয়না এখন আবার চিঠি! তোমাদের নিয়ে আর পারা গেল না।” পাশ থেকে বাবার কথা শুনে মুখে আমাদের দু’জনেরি হাসি। বাবার গলা জড়িয়ে ধরে আমি বলি, আচ্ছা বাবা তুমি কি খুব জেলাস ফিল কর?” “নারে করি না। তোমরা দু’জন দু’জনকে এত ভালবাস কিন্তু পরে আবার ভুলে যাবে নাতো?” দীর্ঘশ্বাস বেরিয়ে আসে বাবার বুক থেকে। আমরা দু’জন হঠাৎ করেই চুপ হয়ে যাই।
আমার জন্মের সাথেই এই ভালবাসার সম্পর্কটার শুরু, আমার মা-বাবার সাথে। এখন যখন একা থাকি তখন খুব ভাবি এদের কথা। শনিবার, বিশ্ব ভালবাসা দিবস। আচ্ছা, ভালবাসা দিবস কি শুধু জুগলদের জন্যে? এই ভালবাসার কি কোন স্থান সেখানে নেই? বাবা-মা কে কখন বলা হয়নি তাদের কে যে কতটা ভালবাসি, কারন মনে হয় এটা একটা অনুভুতির ব্যাপার, যেটা অনুভব করতে হয়। ভালবাসা দিবসের লেখা আহবান করা হয়েছে। আর এটা হচ্ছে এই পর্যন্ত আমার রিয়েল লাইফ ভালবাসা।

অনন্ত জীবন যদি: জীবনানন্দ দাশ

অনন্ত জীবন যদি
জীবনানন্দ দাশ
~~~~~~~~~~~~~~~

অনন্ত জীবন যদি পাই আমি - তাহ'লে অনন্তকাল একা
পৃথিবীর পথে আমি ফিরি যদি দেখিব সবুজ ঘাস
ফুটে উঠে - দেখিব হলুদ ঘাস ঝরে যায় - দেখিব আকাশ
শাদা হয়ে উঠে ভোরে - ছেঁড়া মুনিয়ার মত রাঙা রক্ত - রেখা
লেগে থাকে বুকে তার সন্ধ্যায় - বারবার নক্ষত্রের দেখা
পাব আমি; দেখিব অচেনা নারী আলগা খোঁপার ফাঁস
খুলে ফেলে চলে যায় - মুখে তার নাই আহা গোধূলির নরম আভাস।

অনন্ত জীবন যদি পাই আমি - তাহ'লে অসীমকাল একা
পৃথিবীর পথে যদি ফিরি আমি - ট্রাম বাস ধুলো
দেখিব অনেক আমি - দেখিব অনেকগুলো
বস্তি, হাট - এঁদো গলি, ভাঙ্গা কলকী হাড়ী
মারামারি, গালাগালি, ট্যারা চোখ, পচা চিংড়ি - কত কি দেখিব নাহি লেখা
তবুও তোমার সাথে অনন্তকালেও আর হবে নাকো' দেখা।

February 07, 2009

শুধুই কি কথোপকথন??:: ৬ (শেষ পর্ব)

পরদিন রুদ্রর সাথে আবার কথা হল অনুর। বরাবরের মত কুশল জিজ্ঞাসা করে কোনো রকম ভনিতা ছাড়াই কথা শুরু হল।
--গতকালের কথা শেষ করেন।
--হুম্ম, আমি একজনকে খুব ভালবাসি। আমার অফিস কলিগ অপর্না। আমরা একসাথেই পড়াশুনা করেছি। সে আমার সিনিয়র। অর একটা বোন তোমাদের ইউনিভার্সিটিতে পড়ে, ডাক নাম জয়িতা।
--তিনি কি জানেন আপনার ভাল লাগার কথা?
--না বলা হয়নি। যদি আমাকে ছোটভাইয়ের মত দেখে সে ভয়ে।
--তাহলে এখন কি করবেন? বলবেন না? বলে ফেলেন। আমার মত দেরি করে ফেললে আর হয়ত কখন বলাই হবে না।
--না বলব না। তুমি কাকে বলতে পারনি?
ছোট্ট একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলল দু’জনেই। কথা এড়িয়ে অনু বলল-
--এটা কোন কথা হল? আপনি কাউকে ভালবাসবেন অথচ জানাবেন না। at least, জানালে পরে হ্যাঁ না কিছু একটা তো জানতে পারবেন। বলেই দেখেন।
--না বলব না। কোনদিন বলব না।
--আজব! কেন বলবেন না?
--জানি না।
--আচ্ছা আমি আপনাকে কয়েকটা প্রশ্ন করি?(পরিবেশ হাল্কা করার চেষ্টা)
--কর।
-- কালো না সাদা?
--কালো।
--অপর্না নাকি অন্যকেউ?
--অন্যকেউ।
--কেন?
--অপর্নাকে আমি পাব না। ওর একটা সম্পর্ক আছে।
--ও। কিন্তু আমার মনে হয় এটা ঠিক হচ্ছে না। আপনার বলা উচিত ওনাকে।
--হবে না কিছুই হবে না।
--আমি আপনাকে গতকাল একটা কথা বলেছিলাম মনে আছে কিনা জানি না। আপনার সাথে আমি আর কথা বলব না। আমি আজ থেকে চলে যাচ্ছি।
--তুমি কি আমার জন্যেই চলে যাচ্ছ?
--না আপনার জন্যে আমি কেন যাব? আমার মনে হচ্চে চলে যাওয়া উচিত।
--যাবার আগে তোমায় একটা অনুরোধ করতে পারি? নেক্সট সপ্তাহে আমার-----------
--কি? আপনার বার্থডে?
--নাহ তবে প্রথম “B” এর সাথে মিল আছে।
--বিয়ে? (এবার অনুর আকাশ থেকে পড়ার মত অবস্থা, এতটা আসা করেনি সে)
--হুম্ম বিয়ে। যাকে বিয়ে করছি তার নাম অনিন্দিতা। তুমি আসলে ভীষন খুশি হব। আচ্ছা তোমার না গেলে হয় না?
--ইশ এত্ত বড় একটা ভাল খবর আগে দেবেন না? ভাল খবর কেউ কি শেষে দেয়? আমি চেষ্টা করব কিন্তু কথা দিচ্ছি না। আমাকে যেতেই হবে। অনেক হল আমি এবার যাই।
--ইয়ে মানে তোমার ফোন নাম্বারটা কি পেতে পারি?
--নিশ্চয়ই। ০১৭............। আপনারটা প্লিজ?
--০১৭........., ভাল থেকো। খুব মিস করব তোমার মত ভাল বন্ধুকে।বিদায়।
--আপনি ও ভাল থাকবেন। বিদায়।
এখানেই এখন পর্যন্ত কথোপকথনের শেষ। অনু আর রুদ্র এখন পর্যন্ত জানে না আর কি কখনো তাদের কথা হবে কিনা।

## দুঃখিত। পোষ্টটা আবারো বড় হয়ে গেল। হয়ত শেষ হল এই কথোপকথন। পরে যদি তাদের আবার কথা হয় আপনাদের আবার জানিয়ে দেব। আপাতত এখানেই শেষ।

শুধুই কি কথোপকথন??:: ৫

--কেমন আছ?
--ভাল।
--আপনি?
--এইতো!
--আপনি কি জানেন, আজকে আমি আপনাকেই খুঁজছিলাম?
--আমাকে?? :O কি সৌভাগ্য বলতো আমার!
-- :) জানি না কেন, কিন্তু আজকে মনে মনে আপনাকেই খুঁজছিলাম।
--দিন কাল কেমন যাচ্ছে তোমার?
--ভালই তো।
তারপর অন্যান্যদিনের মতোই অনেকক্ষন চুপচাপ দুজনেই।
--কি ব্যাপার কথা বলছেন না যে? অনুই কথা শুরু করল কথা।
--তুমি বল...
--আমি কথা বললে কিছু পাব?
-- কি পেতে চাও?
--আপনি কি দিতে পারবেন?
--আমার যা সামর্থ তাই দেব।
--তাই?
--হুম্ম তাই।
--কফি খাবেন? আমি এখন কফি খাব।
--দিতে পারো।
--পার্থিব নাকি অপার্থিব?
-- আপাতত অপার্থিব।
-- :) ঠিক আছে। নিন তাহলে।
--ধন্যবাদ।
--কেমন হলো?
--খুব ভাল, দেখতে হবে না কে বানিয়েছে!
-- :D। payment নিয়ে কথা হচ্ছিল। বললেন না তো কি দেবেন।
--তুমি যা চাও তাই দেব।
--পার্থিব নাকি অপার্থিব?
--তুমি কি চাও?
--(অনেকক্ষন চুপ থাকার পর প্রসঙ্গ পালটে) আপনি কি একটা জিনিস জানেন?
--কি?
--আপনার অস্তিত্ব নিয়ে আমার সংশয় আছে।
--:O কেন?
--মনে হয় আপনি একটা অপার্থিব জিনিস। মাঝে মাঝে তো মনে হয় আমি কোন একটা মেশিনের সাথে কথা বলছি। কে জানে হতেও পারেন সেটা।
--আমি এম্নিতেই কম কথা বলি সেটাতো তুমি জান। তারপরেও এই প্রশ্ন কেন?
--মনে হল তাই বললাম। আপনি গান শুনেন?
--এটা একটা প্রশ্ন হল? Music ছাড়া বাঁচা যায়? তবে হিন্দি গান শুনা হয় না খুব একটা।
--হুম্ম। আপনার সম্পর্কে কিছুই জানা হল না।
--কি জানতে চাও। (একটু সতর্ক হয় রুদ্র)
-- এই যে আপনার ফ্যামিলি, কোথায় থাকেন এইসব।
--কি হবে এগুলো জেনে?
--কেন বন্ধু কি বন্ধুর খবর জানতে পারে না?
--হুম্ম। আমার বাবা-মা কিছুই করেন না। আমরা দুই ভাই। আমি ছোট।
---এই?? মানে এখানেই শেষ?
--হুম্ম। আর কিছুই জানানোর নেই। তুমি কিন্তু বললে না এতদিন কোথায় ছিলে?
--ক্লাস আর পরীক্ষা শেষে একটু বেড়াতে গিয়েছিলাম বন্ধুদের সাথে সিলেটে।
--খুব মজা করলে তাই না? আমাকে একবারের জন্যেও মনে পড়ে নাই?
-- না পরে নাই। কেন মনে পরার কথা ছিল নাকি?
--না এম্নিতেই বলছিলাম।
--আমি ভাবছি আপনার সাথে আর কথা বলব না।
--কেন?
--অই যে বললাম আপনার অস্তিত্ব নিয়ে আমি সন্ধিহান।
--তোমার সাথে যে আমার একটা কথা ছিল!
--বলেন বলে ফেলেন।
--আমি একজনকে খুব ভালবাসি কিন্তু বলতে পারছি না।
--কেন? সমস্যা কোথায়? ভাল লাগলে বলে দেয়াটাই তো ভাল আর সেটা আপনাকেই করতে হবে। (এমন সময় একটা জরুরী ফোন এল, কথা বলতে বলতে অনু বিদায় নেবার প্রস্তুতি শুরু করল)
--যাকে আমি ভালবাসি সে আমার চেয়ে বড়। আমার কলিগ!
--আজ একটু তারা আছে আমার। আজকে যাই।পরে আবার কথা হবে।
--ঠিক আছে। ভাল থেকো।
--আপনিও।

February 06, 2009

শুধুই কি কথোপকথন??:: ৪

---কেমন আছো?
---ভাল।
----কোথায় ছিলে এতদিন?
---একটু ব্যস্ত ছিলাম।
----খুব মিস করেছি তোমাকে…………
----ও।
----তুমি মিস করোনি?
----নাহ। মিস করার সময় কোথায়?
এরপর অনেকটা সময় কেউ কোনো কথা বলল না। কতটা সময় হবে? ২ মিনিট? না ১৫ মিনিট? এসময় কথা শুরু হল আবারো।
----কি ব্যাপার চুপ করে আছো যে?
----এমনিতেই
---কিছু বল.........
----কি বলব?
----তোমার কথা...
---আমার তো কোনো কথা নেই...
----কেউ তোমাকে খুঁজে পেলো?
----নাহ।( বিরক্তির প্রকাশ অনুর কন্ঠে)
----পড়াশুনার বাইরে আর কি কি কর তুমি?
----তেমন কিছু না, ছবি আঁকি, বই পড়ি। আপনি? (কিছুটা সপ্রতিভ)
----এইত মুভি দেখা, নেটে বসা সময় চলে যায়।
---একটা প্রশ্ন করি?
----হুম্ম করো।
---নাহ থাক আজকে না অন্য কোন দিন।
---আজকের কাজ কালকের জন্যে ফেলে রাখতে নেই।
---হুম্ম।
----মানে?
----নাহ পরেই করি। আপনার প্রিয় রঙ কি?
----লাল। তোমার?
----সাদা। প্রিয় ফুল?
---কৃষ্ণচূড়া। তোমার?
---রজনীগন্ধা।
---পড়াশুনা করতে কেমন লাগছে?
---ভাল। কেন?
----এমনিতেই।
---আচ্ছা আজ আসি পরে কথা হবে।

বলেই দেরী করলো না অনু, চলে গেল। ২৫ দিন পরে অনু আর রুদ্রর কথা হল আজ। অনেকদিন পরে কথা কিন্তু সেই প্রথমদিনের উত্তাপ কি আজ কোথাও হারিয়ে গেল? কোথায় ছিল অনু এতদিন? কিছু বলল না নাকি বলতে চাইল না??
(চলবে)

February 02, 2009

শুধুই কি কথোপকথন??:: ৩

** রুদ্রর হঠাৎ করেই মেয়েটাকে ভাল লেগে যায়। কোথায় যেন কি একটা আছে! প্রথমত মেয়েটার কথা বলার স্টাইল, আর দ্বিতীয়ত নিজেকে সামলে রেখে চটপট কথা বলে যাওয়া। কথা শেষ হতেই রুদ্রর চোখে-মুখে হাসি আর আশ্চর্য হবার মিশ্র অভিব্যক্তি। অফিস শেষ করার অনেকক্ষন পর্যন্ত মুখের হাসিটা মিলিয়ে গেল না। কি অদ্ভুত! মাত্র কয়েক লাইন কথা কিন্তু তার এতটা প্রভাব? রুদ্রর চেহারার এই আভা বন্ধু পলাশেরও নজর এড়ালো না। সেই প্রথম যখন বুয়েটে ভর্তি হয় তখন প্রথম এই আভাটা দেখেছিল রুদ্রর মুখে যেন চির আকাংখিত জিনিস পেয়ে গেছে। আজ আবার অনেক দিনপর, কি হল ছেলেটার?
বারান্দায় দাড়িঁয়ে আকাশটা দেখছিল রুদ্র। অনেক তারা আজ, ওরাও মনে হয় আজ উৎসব করতে এসেছে ওর সাথে। চোখে পড়া চশমাটা খুলে ঝাপসা হয়ে যাওয়া আকাশটাও আজ উজ্জ্বল লাগছিল তার। পলাশ যে তার পাশে এসে দাড়িয়েছে সেটা তার চোখেই পড়েনি। এখন সে খেলবে আর দেখবে মনে মনে ছক কষল সে।
--- কিরে কি হয়েছে?
---তুই কখন এলি?
---অনেক ক্ষন! তুই তখন আকাশের দিকে তাকিয়ে হাসছিলি।
---(চশমা মুছে, পড়ে নিয়ে) হুম্ম।
---নতুন কিছু হয়েছে নাকি রে?
---হয়েছে। বলেই হাসল। তারপর আবার বলল, কিন্তু কয়েকদিন দেখি তারপর তোকে জানাব।
---কি দেখবি? বলে দিয়েছিস নাকি ওনাকে?
ভুবন ভোলানো হাসি হেসে ঘরে ঢুকে বিছানায় বসল।
--- (কথা এড়িয়ে) এখনো কিছু বুঝতে পারছি না। তবে যদি কিছু হয়ে যায় তুই সবার আগে জানবি। সো আপাতত নো টেনশন। যা গিয়ে ঘুমা অনেক রাত হল। আমিও ঘুমাব। কাল আবার অফিসে যেতে হবে। বেরিয়ে এল দীর্ঘশ্বাস।
--বলিস কিন্তু। গেলাম আমি। :) বলেই পলাশ চলে গেল।

পরেরদিন অফিসে গেল মনে আনন্দ নিয়ে। নানান কাজের চাপে ভুলেই গিয়েছিল মেয়েটার কথা। রোজকার কাজ গুলো ঠিকঠাক মতো করে গেল। দুপুরের খাবার খেল তারপর বোর্ড মিটিং। সন্ধ্যায় একটু ফাঁক পেতেই একটা নাম মাথায় খেলতে লাগল অনুসূয়া। দারুন নামটা! এসময় সামনে দিয়ে চলে গেল অপর্না। ওর অফিস কলিগ। তার চলে যাওয়াটা দেখছিল সে। এক সময় ভুলে গেল অনুসূয়া নামটা। আজ আর কথাও বলা হল না। বাসায় ফিরেও তেমন কোনো কথা না শুধু রুটিন কাজ। পরের দিন খুঁজল সেই সুন্দর নামের মানুষটাকে। কিন্তু খুঁজে পেল না।

একটা একটা করে দিন কেটে যাচ্ছে। কিন্তু অনুসূয়ার কোনো খোঁজ পাওয়া গেল না। কোথায় গেল মেয়েটা? রেগে গেল? কে জানে কি হয়েছে? কাজের প্রচন্ড চাপে আস্তে আস্তে হয়ত বিস্মৃতির অতলে হারিয়ে যাচ্ছে কিন্তু মাঝে মাঝে উঁকি দিচ্ছে। মনে হচ্ছে এসে বলে গেল, ভুলে গেলেন? একটা, দুইটা করে পনেরটা দিন কেটে গেল......কোথায় গেল মেয়েটা?