February 26, 2009

একটি অব্যক্ত ভালবাসা এবং আমি...............

---ইশ কতদিন তোমায় দেখিনা বলতো? তোমার গায়ের গন্ধ শুকি না?
---দূর পাগল!
---সত্যি, তোমার গায়ে একটা অদ্ভুত গন্ধ আছে, আমি নাক দিলেই পাই। মিষ্টি একটা গন্ধ। আমি গায়ে নাক শুকি আর বলি। আর সে হাসে। ভারি মিষ্টি সে হাসি। ঘরে ফিরে যখন তার মুখের এই হাসিটা দেখি অনেকদিন না দেখতে পাওয়ার কষ্ট গুলো যেন নিমিষেই বিদায় নেয়।
---তুমি কিন্তু এখন বাইরের কাপড় ছাড়নি। একটু রাগি কন্ঠে আমাকে হুঁশিয়ারি জানায়।
---এই রে! ভুলেই গিয়েছিলাম। ভীষন আলসেমি লাগছে। একটু পরে ছাড়ি?
---দেরী করলেই দেরী হবে। তুমি কি এখন ছোট্টটি আছ? আচ্ছা ঠিক আছে এসো আমি হেল্প করি।
আমি লজ্জায় সরে আসি। বলি, দূর কি যে বল না? আমি বুঝি পারি না? আচ্ছা যাই। কিন্তু ভীষন ক্ষিদে পেয়েছে আর অনেক কথা বলার বাকি, পেটে কথা আর ক্ষিধা দুটোই ভীষন কষ্ট দিচ্ছে।
---এত কথা না বলে আগে ফ্রেশ হয়ে নাও।

ফ্রেশ হয়ে আসতে আসতে আমার খাবার রেডি।
--- খাইয়ে দাও।
---বাচ্চা আছো এখনো?
--- আচ্ছা খাইয়ে দিতেই তো বললাম। এতে ছোট বড়র কি আছে? যাও দিতে হবে না।
----এখন খাও, হাতে অনেক কাজ পরে আছে। রাতে খাইয়ে দেব।
খাওয়া শেষে পায়ে পায়ে ঘুরতে শুরু করা। এতদিন কি হয়েছে, নতুন বন্ধু কারা, পড়াশুনার খবর, মজা করার খবর, কে কি বলল, ইথারের সম্পর্ক, লেখালেখির খবর বলার শুরু। অনেক রাত হয়ে গেলেও কথা আমার শেষ হয় না। পাশে শুয়েও গল্প করতে করতে ঘুমানো চাই। এমন অনেক বার হয়েছে, আমি গল্প করছি আর একটু পরে শুনি ওর দ্রুত নিঃশ্বাস ফেলার শব্দ।

ছুটি শেষে ফেরার সময় আমি বলি, এই তোমার ঠিকানাটা দাওতো, তোমাকে চিঠি লিখব।
--সময় পাবে চিঠি লেখার?
---সময় খুঁজে বের করব। আগে তো তুমি অনেক চিঠি পেতে, এখন না হয় আমার কাছ থেকেই পেলে।
----ঠিক আছে লিখ। কিন্তু তোমার সাথে তো প্রতিদিন আমার ফোন এ কথা হয়।
---তাতে কি হয়েছে? তাই বলে কি চিঠি লেখা যাবে না? আর তাছাড়া কিছু কথা মুখে বলা যায় না। সেক্ষেত্রে চিঠির মাধ্যমে বলাটা অনেক সহজ।
“উফফ, তোমাদের এত কথা কেন বলতো, এখন আবার চিঠি দিতে হবে? বাসায় আসলে মুখে খই ফোটে তারপরেও কথা শেষ হয়না এখন আবার চিঠি! তোমাদের নিয়ে আর পারা গেল না।” পাশ থেকে বাবার কথা শুনে মুখে আমাদের দু’জনেরি হাসি। বাবার গলা জড়িয়ে ধরে আমি বলি, আচ্ছা বাবা তুমি কি খুব জেলাস ফিল কর?” “নারে করি না। তোমরা দু’জন দু’জনকে এত ভালবাস কিন্তু পরে আবার ভুলে যাবে নাতো?” দীর্ঘশ্বাস বেরিয়ে আসে বাবার বুক থেকে। আমরা দু’জন হঠাৎ করেই চুপ হয়ে যাই।
আমার জন্মের সাথেই এই ভালবাসার সম্পর্কটার শুরু, আমার মা-বাবার সাথে। এখন যখন একা থাকি তখন খুব ভাবি এদের কথা। শনিবার, বিশ্ব ভালবাসা দিবস। আচ্ছা, ভালবাসা দিবস কি শুধু জুগলদের জন্যে? এই ভালবাসার কি কোন স্থান সেখানে নেই? বাবা-মা কে কখন বলা হয়নি তাদের কে যে কতটা ভালবাসি, কারন মনে হয় এটা একটা অনুভুতির ব্যাপার, যেটা অনুভব করতে হয়। ভালবাসা দিবসের লেখা আহবান করা হয়েছে। আর এটা হচ্ছে এই পর্যন্ত আমার রিয়েল লাইফ ভালবাসা।

No comments: